MEGA: 20 GB ফ্রি স্টোরেজসহ এনক্রিপ্টেড ক্লাউড স্টোরেজ

আসসালামু আলাইকুম।

অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনাতে হার্ডডিস্কে থাকা প্রয়োজনীয় ফাইল বা ডাটা হারিয়ে ফেলা অসম্ভব কিছু না। এজন্য দরকারী ফাইলগুলোর ব্যাকআপ রাখাটা ভালো অভ্যাস। ক্লাউডভিত্তিক বিভিন্ন সার্ভিস এখানে আপনাকে সাহায্য করতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম হলো MEGA। তারা বিনামূল্যে ২০ জিবি ক্লাউড স্টোরেজ প্রদান করে, যেখানে আপনি আপনার ডিভাইসে ফাইল ব্যাকআপ ও Sync রাখতে পারবেন অথবা অন্য কারো সাথে ফাইল শেয়ারের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।

গুগল ড্রাইভ, ওয়ান ড্রাইভ, ড্রপবক্সসহ আরো জনপ্রিয় কিছু সার্ভিস রয়েছে এখানে, যাদের নিজ নিজ এডভান্টেজ ও ডিজএডভান্টেজ রয়েছে। মেগা-র ক্ষেত্রে, নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি এর সবচেয়ে বড় হাইলাইট। পাশাপাশি ২০ জিবি ফ্রি স্টোরেজ বেশ আকর্ষণীয়, কেননা অন্য সার্ভিসগুলো সাধারণত ফ্রি প্ল্যানে আরো কম স্টোরেজ প্রদান করে থাকে। এর পাশাপাশি তাদের ব্যাকআপ ও Sync সার্ভিস লিনাক্স, উইন্ডোজ ও ম্যাকে সমর্থিত, যেখানে গুগল ড্রাইভ ও ওয়ান ড্রাইভ-এর কোন অফিশিয়াল লিনাক্স ক্লায়েন্ট নেই। অ্যান্ড্রয়েডের জন্যও MEGA ক্লায়েন্ট আছে। তবে সেখানে ব্যাকআপ ও Sync সার্ভিস নেই।

এটা বেশ অভিয়াস যে প্রাইভেসির দিক থেকে গুগল কিংবা মাইক্রোসফট কখনোই সবচেয়ে বিশ্বস্ত না। এদিক থেকে MEGA এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনসহ সিকিউর একটি সার্ভিস হিসেবে পরিচিত। তবে এই টেকনিকাল দিকগুলো আমার দখলে একদমই নেই, তাই এ নিয়ে কোন ভ্যারিফিকেশনমূলক কিছু বলতে পারছি না।

লিমিটেশনের মধ্যে থাকবে MEGA-তে এড-অন ধরণের ফিচার বা থার্ড পার্টি অ্যাপ ইন্টিগ্রেশন তেমন নেই। একই সাথে কোলাবোরেশন ফিচারও লিমিটেড। যেমন গুগল ড্রাইভের সাথে গুগল ডকসসহ বিভিন্ন অ্যাপ ইন্টিগ্রেটেড আছে, এধরণের ফিচার MEGA-তে ওভাবে নেই।

20 GB ফ্রি বেজ স্টোরেজসহ অ্যাপ ইন্সটল ও ইনভাইটেশনের মাধ্যমে আপনি সর্বোচ্চ 50 GB পর্যন্ত ফ্রি স্টোরেজ পেতে পারেন, তবে অতিরিক্ত স্টোরেজের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকবে। আপনি ফাইল ব্যাকআপ রাখার জন্য এই স্টোরেজ ব্যবহার করতে পারবেন অথবা ফাইল অনলাইনে শেয়ার করার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ফাইল শেয়ারের ক্ষেত্রে ট্রান্সফার লিমিট রয়েছে। অন্যদিকে আপনার যদি বেশি স্টোরেজ বা ট্রান্সফার লিমিট প্রয়োজন থাকে, সেক্ষেত্রে MEGA-র পেইড প্লান রয়েছে, এবং তা কম্পিটিশনের তুলনায় সাশ্রয়ী। MEGA-র আরেকটি আকর্ষণ হলো এটি ১০০টি পর্যন্ত ফাইল ভার্সন সংরক্ষিত রাখতে পারে।

MEGA ওয়েব ইন্টারফেস

MEGA-র ওয়েব ইন্টারফেস গোছানো ও ন্যাভিগেট করা সহজ। এখানে ক্লাউড ড্রাইভ ব্রাউজ, ফাইল আপলোড ও শেয়ার করা যাবে। পাশাপাশি Photos ট্যাবটিতে মিডিয়া ফাইলগুলো দেখা যাবে।

বাড়তি ফিচারের মধ্যে অন্য মেগা ইউজারদের কনটাক্টে যুক্ত করে তাদের সাথে ফাইল শেয়ারিং এবং চ্যাট করার সুবিধা আছে। সেইসাথে এখানে মিটিং ফিচার রয়েছে। মিটিং হোস্ট করতে অ্যাকাউন্ট লাগবে, তবে যারা মেগা ব্যবহারকারী নন তারাও মিটিংয়ে অংশ নিতে পারবে। সমস্যা হলো শুধুমাত্র ক্রোমভিত্তিক ব্রাউজারে মিটিং ফিচারটি সমর্থিত, ফায়ারফক্সে সমর্থিত না।

কোন ফাইল বা ফোল্ডার অন্য কোন মেগা ইউজারদের সাথে তাদের ইমেইলের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারবেন। অথবা লিঙ্ক তৈরি করে অনলাইনে যে কারো সাথে শেয়ার করতে পারবেন। প্রো প্লানগুলোতে শেয়ারকৃত লিঙ্কে এক্সপ্রায়ারি ডেট ও পাসওয়ার্ড সেট করার ফিচার আছে।

MEGAsync (ব্যাকআপ ও সিনক্রোনাইজেশন)

ডেস্কটপে MEGAsync ক্লায়েন্ট অফিশিয়ালি লিনাক্স, উইন্ডোজ, ম্যাক ওএসের জন্য এভেইলেবল। এর মাধ্যমে কম্পিউটারের কোন ফোল্ডার ক্লাউডে ব্যাকআপ অথবা Sync রাখতে পারবেন। পার্থক্য হলো ব্যাকআপের ক্ষেত্রে শুধু ক্লাউডে ফোল্ডারের ডাটা ব্যাকআপ থাকবে। অন্যদিকে Sync এর ক্ষেত্রে ক্লাউড থেকে কোন পরিবর্তন করা হলে ডিভাইসেও সেটি সিনক্রোনাইজড হবে।

মোবাইল অ্যাপ

মোবাইল ডিভাইস অর্থাৎ অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস অ্যাপে ফোল্ডার ব্যাকআপ ও সিনক্রোনাইজেশন ফিচার নেই। তবে ক্যামেরা আপলোড ফিচারের মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও অটোমেটিক ব্যাকআপ রাখার সুবিধা আছে। বাদবাকি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি মূলত ওয়েব ইন্টারফেসের ফিচারগুলো প্রদান করবে। মিটিংয়ের ক্ষেত্রে মোবাইলে স্ক্রিন শেয়ারিং ও রেকর্ডিং ফিচার নেই, যে ফিচারগুলো ডেস্কটপ থেকে পাওয়া যাবে।

দীর্ঘায়িত করব না আর। সিকিউরিটিসসহ আরেকটু বিস্তারিত অ্যানালাইসিসের জন্য আপনি অনলাইনে মেগা-র অন্য রিভিউগুলো দেখতে পারেন, আমি দুটো লিঙ্ক করে দিচ্ছি- টেকরাডার, রিস্টোর প্রাইভেসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *